স্বাস্থ্য

নারী যে কাজটি নীরবে করে যায়

নারী যে কাজটি নীরবে করে যায়

আজকে যে মা, সে কিছুদিন আগে ছিল কারো শুধু স্ত্ৰী, তার আগে ছিল মেয়ে বা তারও আগে ছিল কন্যা। মেয়েদের জীবনটি খুব বৈচিত্রময়, অর্ধেক জীবন থাকে এক রকম আবার বাকি অর্ধেক সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি পরিবেশে। অনেক সময় সেই পরিবেশ তার ভালো না লাগলেও সেখানেই তাকে থাকতে হয় নিজেকে মানিয়ে নিয়ে। বিয়ের পর থেকে শুরু হয় নতুন নতুন অভিজ্ঞতার। আরো কিছুদিন পর মা হওয়া, ভালোলাগার চরম মুহূর্ত একটি মেয়ের জীবনে। এতো দিনের খেলনা পুতুলটির কথা ভুলতে শুরু করে নতুন একটা মিষ্টি জীবন্ত মানব সন্তানকে ঘিরে। সাথে থাকে পরিবারের অন্যদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করা।

এ সময় থেকে পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল হতে গিয়ে প্রায় সকল মায়েরাই নিজেদের কথা ভুলে যায়, শুরু হয় নিজের প্রতি অবহেলা। দিনের পর দিন এমন অবহেলা তার শরীরে বিভিন্ন ধরণের অসুখ দানা বাধতে থাকে। অন্য দিকে আস্তে আস্তে সে কর্মক্ষমতা হারাতে থাকে। তখন দেখা যায় এই মানুষটাই পরিবারের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তখন পরিবার হয়ে যায় এলোমেলো। আপনার সন্তান ও পরিবারের জন্য, সুস্থ থাকতে হবে। তাই আর অবহেলা নয় নিজেই নিজের যত্ন নেওয়া শুরু করুন।

আমাদের এই ব্যাপারে এখনই সচেতন হবার সময়। এমন অনেক মাকে দেখেছি যারা সকলে খেয়ে চলে গেলে যা বেঁচে থাকে তাই খায়, কখনো না খেয়েও থাকে। রক্তশূন্যতা সহ বিভিন্ন রোগ আপনার জন্য অপেক্ষা করছে আর হাড়ের রোগ তো এখন ঘরে ঘরে। আর তখন আপনার সন্তানরা যতই যত্ন করুক অথবা বড় বড় ডাক্তার দেখাক না কেন, আপনার পুরনো অস্তি মজ্জা তার কার্যক্ষমতা আর ফেরত পাবে না। এতে করে আপনার ও আপনার পরিবারের সমস্যা আরও বেড়ে যাবে।

সবাইকে প্রতিদিন গ্লাস ভর্তি দুধ না দিয়ে নিজের জন্য একটু খানি রেখে দিন না, তা নাহলে এদের জন্য শেষ বয়সে ক্যালসিয়ামের অভাবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রান্না করার অবস্থাতেই থাকবেন না, তখন বিভিন্ন ধরণের ঔষুধ খেলেও কোন লাভ হবে না।

নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত পরিবারের সকল মায়েদের ক্ষেত্রেই একই কথা প্রযোজ্য, তারা ইচ্ছে করে নিজের যত্ন না করে যে মাহাত্ম্য দেখানোর চেষ্টা করে, তা আসলেই একটা গর্হিত অপরাধ। আপনি যদি আসলেই সন্তান কে ভালবেসে থাকেন, তাহলে নিজেকে সুস্থ্য সুন্দর রাখুন। নিয়ম মেনে চলুন, নিজের জীবন কে উপভোগ করুন, সন্তানের সাথে আরও অনেকদিন বেঁচে থাকার চেষ্টা করুন। এই সমাজ ভালো মায়ের যে মান তৈরি করে দিয়েছে-তা গুটি কয়েক আদি মানুষের সুবিধা আদায়ের পরিকল্পনার ফসল, আপনি কেন তাদের সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়নের হাতিয়ার হবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button