স্বাস্থ্য

কোন মাস্ক করোনা থেকে রক্ষা করতে পারে না, তবুও আমরা ব্যবহার করছি- Corona From Mask ( Red Alert )

কোন মাস্ক করোনা থেকে রক্ষা করতে পারে না, তবুও আমরা ব্যবহার করছি

মাস্ক এর ব্যবহার নিয়ে অনেক গবেষণা শেষ হয়েছে, হয়তোবা আরো হবে

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ব্যাক্তিগত, প্রতিষ্ঠান ও ইউনিভার্সিটি মাস্ক এর উপর উচ্চ মানের খুব ব্যায়বহুল গবেষণা করছে তার উপর ভিত্তি করে কোন মাস্ক ব্যবহার করবেন, কিভাবে ধোবেন, একটি মাস্ক কয়দিন ব্যবহার করবেন তার যাবতীয় বিষয় যা কোনো একটি ঠিকঠাক মতো না মানলেও করোনা পজেটিভ হতে পারে। একটু কষ্ট করেন, আর অল্প কিছু দিন, এর ভেতরেই মনে হয় কোনো ঔষধ আবিষ্কার হইয়ে যাবে। যাই হোক এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে, আপনার ও আপনার কাছের মানুষগুলোর বাঁচানোর জন্য আপনি জেনে নিন ও তাদের জানান।

মাস্ক তো আমরা যেমন খুশি তেমন ভাবে ব্যবহার করছি।
যার অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো, সে দামি মাস্ক ব্যবহার করছে, আবার যার একটু খারাপ সে হয়তোবা হাতের কাছে যা পাচ্ছে তাই দিনের পর দিন ধুয়ে ধুয়ে ব্যবহার করছে। এ সব করে হয় আপনার হার্টের সমস্যা তৈরী হচ্ছে না হয় করোনা পজেটিভ হচ্ছেন। পৃথিবীময় বিশেষজ্ঞরা এ নিয়ে গবেষণা করে তাদের রিসার্চ পেপার পাবলিশড করেছে।
সেখান থেকে আমি আপনার জন্য মাস্ক নিয়ে এই আর্টিকেল টা তৈরী করেছি।
মাস্ক একটু জেনে বুঝে ব্যবহার করলেই অনেক খানিক নিরাপদ থাকতে পারবেন আপনি। যাই হোক, বর্তমানে আপনি বাংলাদেশের দোকানগুলোতে সাধারণত ৪ ধরণের মাস্ক দেখতে পাবেন।

কাপড়ের মাস্ক, সার্জিক্যাল মাস্ক, N 95 মাস্ক এ ছাড়াও আরো কয়েক রকম মাস্ক কদাচিৎ দেখতে পাওয়া যায়।

বেশিরভাগ মাস্কই কেবলমাত্র এক বার ব্যবহারের জন্য। আদর্শভাবে, একবার মাস্ক পরার পরে বা অভ্যন্তরের আস্তরণটি ভিজে গেলে আর ব্যবহার করা উচিত নয়। আপনি যদি মুখোশটি পুনরায় ব্যবহার করতে চান তবে এটি শুকনো রাখতে হবে যাতে এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়। মুখোশটি খুলে আপনি কখনোই এটি থুতনীর নীচে রাখবেন না তাতে থুতনীতে লেগে থাকা জীবাণুগুলি মাস্কের সাথে সুন্দর ভাবে লেগে যাবে, আর পরে যখন আপনি সেটা আবার নাকে লাগাবেন আরাম্সে জীবাণু ঢুকে পড়বে আপনার শরীরে। আর আমরা পথে, ঘাটে, বাড়িতে এই কাজটাই সব থেকে বেশি করছি।

আবার অনেক সময় তো আপনি এমন মাস্ক পেয়েছেন যেটিতে অক্সিজেনের ঘাটতি সৃষ্টি করে। নিঃশাস নিতে কষ্ট হয় আবার একই মাস্ক যদি আপনি দীর্ঘ দিন ব্যবহার করেন তাহলেও অস্বস্তিকর অনুভতি হতে পারে। যদি আপনার মাস্কটি স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে সাহায্য করে তবে তা ব্যবহার করতে পারেন।

কোন মাস্কগুলো ধুতে পারবো তা জানি :

WHO ও বিভিন্ন দেশের গবেষণার তথ্য মতে

কাপড়ের মাস্ক:

সংক্রামিত রোগীদের যত্ন নেওয়ার সময় আদর্শভাবে এই মাস্ক সুপারিশ করা হয় না কারণ তারা পর্যাপ্ত সুরক্ষা আপনাকে সরবরাহ করবে না। তবে, কাপড়ের মাস্ক এ আপনি আরো বেশি ফিল্টার ব্যবহার করে তার কার্যকারিতা বাড়িয়ে তুলতে পারেন যতক্ষণ আপনার ঐটা দিয়ে শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়।

হোমমেড কাপড়ের মাস্কগুলি পরিধানকারীকে রক্ষা করতে কম কার্যকর কারণ বেশিরভাগের মধ্যে ফাঁকা থাকে। অর্থাৎ আপনার নাক এবং গালের কাছে এমন জায়গাগুলি রয়েছে যেখানে একটু খানিক ফাঁকা থাকতে পারে আর ওই ফাঁকা গুলো দিয়ে ভাইরাসের কণা গুলি ঢুকে যেতে পারে।

কাপড়ের মাস্ক ও সার্জিক্যাল মাস্কের গঠনগত পার্থক্য

ফ্যাব্রিক পছন্দ খুব গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যাপক কোহলার একাধিক স্তরগুলিতে ভাঁজ করা শক্তভাবে বোনা ফ্যাব্রিক ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। ফ্যাব্রিক নিয়ে পিয়ারজে প্রকাশিত একটি গবেষণা পত্রে, ২০ টি বিভিন্ন ধরণের কাপড়ের মুখোশের পৃষ্ঠের দিকে নজর দেওয়া হয়েছিল এবং মুখোশগুলিতে ছিদ্রের আকার ৮০ থেকে ৫০০ মাইক্রোমিটার পর্যন্ত পাওয়া গেছে। তুলনার জন্য, করোনাভাইরাস প্রায় ০.১২ মাইক্রোমিটার।

কিভাবে এটি আপনি পরিষ্কার করবেন

হালকা গরম পানির সাথে গুঁড়ো সাবান দিয়ে আধা ঘন্টা ভিজিয়ে একটু কচ্লে ধুয়ে ফেলুন, এর পর রোদে অথবা চুলায় ভালো মতো শুকিযে নিয়ে পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে ৩ টি লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করা ভালো।

তবে একটা কথা মনে রাখবেন যে, অন্য একটা গবেষণায় কিন্তু দেখা গেছে যে, প্রতিবার ধোবার পর কাপড়ের ঘনত্ব কমতে থেকেছে। আর তাতে করে, তার ভাইরাস প্রতিরোধের কাযকর ক্ষমতাও কমে যাচ্ছে।

তাই, কয়েক স্তরে কাপড় ব্যবহার করে এটিকে ভাইরাস প্রোটেক্টিভ হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তবে এটি ২০ বারের বেশি ধুয়া ঠিক নয়।

সার্জিক্যাল মাস্ক:

সার্জিক্যাল মাস্ক মূলত অস্ত্রোপচারের সময় বড় কোনো ফোঁটা, রক্তের স্প্ল্যাশ বা শরীরের অন্য কোনো রকম তরল থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে তৈরী করা হয়। সার্জিক্যাল মাস্ক ফিল্টারিং দক্ষতা মাস্কের ধরণের উপর নির্ভর করে, এটি ১৫% থেকে ৯৫% পর্যন্ত হতে পারে। তাই সার্জিক্যাল মাস্ক আপনি দেখে বুঝে কিনবেন।

সাধারণত, N95 মাস্ক এর তুলনায় অস্ত্রোপচারের মুখোশগুলি কম কার্যকর কারণ তারা নাক এবং মুখের চারপাশে একটি সীল তৈরি করে ফেলতে পারে না সবসময়। ওই ফাঁকা গুলা দিয়ে ভাইরাস কণা ঢুকে যেতে পারে। তবে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সার্জিক্যাল মাস্ক বাড়িতে তৈরী মুখোশ থেকে ভালো করছে।

কিভাবে এটি আপনি পরিষ্কার করবেন

যদি এটি শুকনো থাকে, স্তর এবং আকারটি অক্ষত থাকে তবে এটি একটি কাগজের প্যাকেটে রেখে মুখ আটকে ৭ দিন রেখে দিন, তারপর ব্যবহার করেন। যদি প্লাস্টিকের পাত্রে মাস্ক রাখেন তবে আর্দ্রতা জমে ব্যাকটেরিয়া আরো বেড়ে যেতে পারে। সার্জিক্যাল মাস্কগুলি পানি দিয়ে ধুবেন না। তাতে মাস্কের ফিল্টারিং পর্দা বিশ্রী ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং ওটি তার কার্যকারিতা হারাতে থাকে। তবে সার্জিক্যাল মাস্ক একবার ব্যবহার করাই ভালো।

N 95 মাস্ক:

এটিতে অক্সিজেন কম প্রবাহিত হয়। তাই সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক সময় এটি ব্যবহার করা ঠিক নয়। হাসপাতালে, সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে বা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে এমন জায়গায় যান তবে এইটা ব্যবহার করতে পারেন। সে ক্ষেত্র্রে পুনরায় ব্যবহার করতে যাবেন না। তবে who এর মতে এটি ৯৫% করোনা প্রতিরোধ করতে পারে। N95 এ পলিপ্রোপলিন হাইড্রোফোবিক ও শূন্য আর্দ্রতা থাকে। যখন আপনি এটি ব্যবহার করছেন না, দয়া করে এটি একটি বন্ধ কাগজের পাত্রে সংরক্ষণ করুন।

কিভাবে এটি আপনি পরিষ্কার করবেন

N95 মাস্ক পানি দিয়ে ধুবেন না। ধরুন আজকে ব্যবহার করেছেন এরপর এটিকে চুলার উপরে জীবাণু মুক্ত কাঠের ক্লিপ দিয়ে আটকে ৭ দিনের জন্য ঝুলিয়ে রাখুন তবে মনে রাখবেন N95 মাস্ক কখনোই সূর্যের আলোতে শুকাতে দিবেন না। তাতে মাস্কটির গুণগত মান নষ্ট হয়ে যাবে। আবার অন্যভাবে, এটি একটি কাগজের প্যাকেটে রেখে মুখ আটকে ৭ দিন রেখে দিন, তারপর ব্যবহার করেন।

প্রস্তুতকারকের সর্বরাকৃত গাইডলাইন অনুসরণ করুন, এটি সর্বোচ্চ ৫ বার ব্যবহার করা ভালো।

সবশেষে আমরা আলোচনা করবো যে মাস্ক নিয়ে তা এদেশে একটু কম দেখা যায় আর সেটি হচ্ছে এলাস্টমেরিক।

এলাস্টমেরিক মাস্ক :

এটা যদি যথাযথ ভাবে পরীক্ষিত হয় এবং আপনার মুখের সাথে মিলে যায় অর্থাৎ কোনো রকম ফাঁকা না থাকে তবে N95 এর মতোই কার্যকর। এটি বার বার ব্যবহার করা যায়। এটি ৯৫% ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া আটকাতে পারদর্শী এবং ০.১ থেকে ০.৩ মাইক্রোমিটার পর্যন্ত আটকাতে পারে।

কিভাবে এটি আপনি পরিষ্কার করবেন

প্রতি বার ব্যবহারের পরে জীবাণু মুক্ত করতে অ্যালকোহল দিয়ে মুছুন। সংযুক্ত ফিল্টার কার্তুজগুলি প্রতিস্থাপনযোগ্য এবং সহজেই করা যায়। যদিও এগুলি পুনরায় ব্যবহার করা যায়, তবে তাদের জীবনকাল অনেকগুলি কারণ এর উপর নির্ভর করে যেমন কণার এক্সপোজার ও ঘনত্ব। মাস্কের সাথে থাকা কার্টিজ গুলা করোনভাইরাস কণাকে ফিল্টার করার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে কিনা তা যাঁচাই বাছাই করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এটি পুনরায় ব্যবহার করতে এটির কার্টিজকে ৭ দিন বাতাসে রেখে দিন অথবা কাগজের প্যাকেটে মুখ আটকে ৭ দিন রেখে দিন।

করোনা নিয়ে শেষ গবেষণার ফলাফল – ভুলগুলো ঠিক করে নিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button