জীবনযাপন

Plastic এর কার্বন থেকে আপনার শিশুকে বাঁচান

Plastic এর কার্বন থেকে আপনার শিশুকে বাঁচান

আমরা সকলেই জানি Plastic আমাদের পরিবেশ ও সাস্থের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এমনকি উৎপাদনশীল কোম্পানিগুলো আরো বেশি জানে এই সম্পর্কে। তবুও প্লাস্টিকের পণ্য তৈরী করা বন্ধ করা যাচ্ছে না। কারণ আমরা সাধারণ মানুষ প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর বিন্দু মাত্র চেষ্টা করছি না। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা যদি কোম্পানিগুলো সৃষ্টি করতেও যায়, তবুও প্রোডাক্শনে যাবার আগে মার্কেট এনালাইসিস করলেই আবার পিছিয়ে যাচ্ছে। আমাদের পছন্দ ও চাহিদার সাথে প্রাকৃতিক প্লাস্টিকের কিছু বৈসাদৃশ আছে, এই কারণে।

Plastic থেকে কার্বন:

পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের Plastic রয়েছে, আমরা একে প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন আকার দিয়ে থাকি। তাই আমরা প্রতিটি প্লাস্টিকের বিশেষত্বের জন্য বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক যোগ করি। কিন্তু মূল কথা হল যে, Plastic যেভাবেই তৈরি হোক না কেন, প্লাস্টিকের মোট ওজনের প্রায় আশি শতাংশই কার্বন দিয়ে তৈরি।

একটি প্লাস্টিকের ব্যাগে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাসের 0.86m3 সমতুল্য। সম্ভবত, আধা লিটারের প্লাস্টিকের বোতলের মোট কার্বন ফুটপ্রিন্ট প্রায় তিন আউন্স।

এক টুকরো প্লাস্টিকের মধ্যে আশি শতাংশ মারাত্মক কার্বন থাকে। এক কেজি প্লাস্টিক পোড়ালে ২.৯ কিলোগ্রাম কার্বন উৎপন্ন হয়। তাছাড়াও প্লাস্টিক তৈরির সময় বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করা হয়, যেমন: কার্বন, সালফার, ক্লোরিন, হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন এবং অক্সিজেন।

আরেকটি বিষয় হল যে, প্লাস্টিক তৈরি করতে প্রচুর তাপ প্রয়োজন এবং আমরা জানি, কার্বন আগুন থেকেও উৎপন্ন হয়।

প্রাকৃতিক প্লাস্টিক:

সহজ কথায়, বিভিন্ন শস্য গাছ থেকে প্রাকৃতিক প্লাস্টিক তৈরী হয়। প্লাস্টিক তৈরি হয় চিনির মতো পদার্থের সঙ্গে মিশিয়ে। এটিতে  সাধারণত কোন রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না। এটি তৈরি করতে খুব বেশি তাপ লাগে না, এই ধরনের পুনঃব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দেড়শো ডিগ্রি থেকে দুইশত ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় তৈরি করা হয়। যেহেতু খুব বেশি তাপের প্রয়োজন হয় না, তাই খুব কম কার্বন উৎপন্ন হয়। আমাদের পার্শ্ববর্তি দেশ ভারত, চীন সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এটি উৎপাদিত হয়।

Plastic এর পণ্যের সাথে প্রাকৃতিক প্লাস্টিকের পণ্যের তুলনা:

অবশ্যই পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের দিক বিবেচনা করে প্রাকৃতিক প্লাস্টিকের প্লেট, ডিনার সেট ও অন্যান্য পণ্য প্লাস্টিকের পণ্য থেকে ভালো। যদিও এটি শতভাগ সুবিধা দেয় না, তবুও এর চেয়ে ভাল আর কিছুই নেই।

বিশ্বব্যাপী, প্রাকৃতিক প্লাস্টিকের পণ্য ব্যাবহারের পর মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলা হয় যা তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে মাটিতে মিশে যায়। এমনকি বাগানের জন্য জৈব সারও বানানো হয়ে থাকে। অন্যদিকে, একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রতিদিন প্রায় ষাট মিলিয়ন প্লাস্টিকের বোতল সমুদ্রে তলিয়ে যায়। মাত্র বিশ বছরের অর্থাৎ প্রায় ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রের মাছের সংখ্যা থেকে বেশি হয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

প্রাকৃতিক প্লাস্টিকের প্লেট এবং ডিনার সেট বায়োপ্লাস্টিক থেকে তৈরি, যা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক, এটা আমাদের গ্রহের জন্য উপকারী। অন্যদিকে প্লাস্টিক কার্বনসহ প্রচুর পরিমাণে ক্ষতিকর রাসায়নিক দিয়ে তৈরি করা হয়, যা আমাদের বিশ্বের জন্য খুবই বিপজ্জনক। দীর্ঘ এক গবেষণার পর দেখা গেছে যে, Plastic এ প্রায় দশ হাজার রাসায়নিক উপাদান রয়েছে।

প্রাকৃতিক প্লাস্টিকের পণ্যগুলি পুনরায় ব্যবহারযোগ্য এবং নিরাপদ। কিন্তু প্লাস্টিক পণ্য পুনর্ব্যবহার করা জটিল এবং অস্বাস্থ্যকর। শুধু তাই নয়, এটি মানুষের জীবন ও পরিবেশকে হুমকির মুখে ফেলে।

পুনর্ব্যবহৃত প্রাকৃতিক প্লাস্টিকের মধ্যে কোন রাসায়নিক থাকে না। অন্যদিকে, পুনর্ব্যবহৃত প্লাস্টিকের বোতলগুলি আগের চেয়ে আরও বেশি রাসায়নিক এবং মাইক্রোপ্লাস্টিক উৎপন্ন করে।

পুনঃব্যবহারযোগ্য প্রাকৃতিক প্লাস্টিকের ভেতর পৃথিবীর ভেতর ভয়ঙ্কর রাসায়নিক উপাদান মেলামাইন কখনও পাওয়া যায় না। কিন্তু সময়ে সময়ে প্লাস্টিকের মধ্যে মেলামাইন পাওয়া যায়।

পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকে ব্যাকটেরিয়া থাকে যা আপনাকে অসুস্থ করে তুলতে পারে। পুনর্ব্যবহৃত প্রাকৃতিক প্লাস্টিকের পণ্যগুলিতে ব্যাকটেরিয়া থাকে না, উল্টো তারা ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে।

প্লাস্টিকের বিশ্ববিখ্যাত বিষাক্ত রাসায়নিক হল BPA, যা আমাদের স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টিতে জড়িত। প্লাস্টিকের পানির বোতলটি বিসফেনল এ এবং থ্যালেটস দিয়ে তৈরি। আমরা যখন পানি পান করি তখন এই রাসায়নিকগুলি ধীরে ধীরে প্লাস্টিকের বোতল থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।

শেষ থা:

প্রাকৃতিক Plastic এর ব্যবহার বিশ্বব্যাপী দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এইতো কিছুদিন আগে ভারত তাদের দেশে প্লাস্টিকের ব্যবহার সীমিত করেছে। এমনকি প্রাকৃতিক প্লাষ্টিক উৎপাদনে ভারতে বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টরি আছে। বিভিন্ন দেশ হতে কাঁচামাল স্থানীয় মানুষেরা সংগ্রহ করে ভারতে পাঠিয়ে দেয়, তারা কাঁচামালকে পণ্য তৈরির উপযোগী উপাদান হিসেবে তৈরী করে দেয়। তারপর আবার সেইসকল দেশে পাঠিয়ে দেয়। ভারত ছাড়াও এশিয়াতে চীন এই সেক্টরে প্রধান উৎপাদক দেশ হিসেবে পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশে ব্যবসা করছে।

Kollol Khan

My professional background includes research and writing in the field of business.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button