Ginkgo Biloba Benefits সম্পর্কে বলতে গেলে অনেক কথাই বলতে হয়। জিংকো বাইলোবা একটি ভেষজ ঔষধি গাছ। যার রয়েছে বিভিন্ন রকমের গুন্, অনেকগুলো আমাদের শরীরের খুব বেশি উপকার করে থাকে, এমনই একটি গাছ হলো জিংকো বাইলোবা। এটি বেশ খানিকটা দুর্লভ একটি গাছ, মূলত চীন দেশে এই ভেষজ ঔষধি এর মূল উত্পত্তি। আমরা জানি চীন ভেষজ ঔষধ তৈরিতে বহু শত বছর ধরে পৃথিবীতে সবার থেকে এগিয়ে আছে। তারা জিংকো বাইলোবা গাছের নির্যাস ব্যবহার করে বিভিন্ন ভেষজ ঔষধি তৈরী করে থাকে।
জিংকো বাইলোবা গাছে মানব দেহের উপযোগী খুবই উন্নত মানের ভেষজ গুণাগুণ থাকে। মানব দেহের বিভিন্ন জটিল রোগ নিরাময়ের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী। এটিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহ রোধকারী বেশ কিছু উপাদান বর্তমান আছে। যা মানব দেহের বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা ও অসুস্থতা থেকে পরিত্রান পেতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।
প্রথমেই আসুন জানি জিংকো বাইলোবার উপকারিতা; অনেক রোগের নিরাময়কারী হিসেবে ব্যবহার হলেও মূলত অ্যালজাইমার ও ডিমেনশিয়া রোগের জন্য ব্যাপক উপকারী।
Ginkgo Biloba/ জিংকো বাইলোবা কি ও তার বর্ণনা:
জিংকো বাইলোবা বেশ বড় আকৃতির ভেষজ গাছ। এই উদ্ভিদ সোজা, লম্বা এবং বহু শাখা-প্রশাখাযুক্ত প্রায় ৬০ থেকে ১০০ ফিট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এটির পাতা ও কাণ্ডে বিভিন্ন ধরণের আয়ুর্বেদিক গুণাগুণ থাকে, যা পরীক্ষিত।
Ginkgo Biloba Benefits:
জিংকো বাইলোবা ভেষজ গাছের উপকারিতা-
স্টোক এর বিরুদ্ধে কাজ:
এই গাছের পাতা থেকে এক ধরনের নির্যাস পাওয়া, যার ভেতর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে দেখতে পাওয়া যায় কার্বনিক অ্যাসিড ও গ্লুকোজ। এ ছাড়াও পাওয়া যায় কুয়েরসেটিন, ডি-গ্লুকেরিক, টেরেপিন ল্যাক্টোন এবং জিংকগোলিক অ্যাসিডের গুণ। এইগুলো যেহেতু প্রকৃতিতে পাওয়া যাচ্ছে, এখন দেখার বিষয় হচ্ছে এই সকল উপাদান আপনার শরীরের ভেতর কি কি উপকার করে থাকে। সর্ব আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান দেখেছে যে, শরীরের রক্ত চলাচল সঠিক ও স্বাভাবিক ভাবে চালাতে গেলে যে সকল উপাদান শরীরের ভেতর কাজ করে, তার ভেতর ওই সকল উপাদান অন্যতম। আর আমরা জানি স্টোক মূলত রক্ত চলাচলের বাঁধা থেকে সৃষ্টি।
আজকের দিনে পৃথিবীতে, সর্বোপরি এশিয়াতে স্টোক এক ভয়াবহ নীরব মরণ রোগ হিসেবে দেখা দিয়েছে। যেমনটি প্রায় প্রতিটি পরিবারের কোনো না কোনো আত্মীয় স্বজন করোনাকে মারা গিয়েছে। তেমনটি প্রীতি পরিবারের কাছেই আছে স্টোকে আক্রান্ত হবার ইতিহাস। আমরা হয়তো অচিরেই স্টোকের সাথে যুদ্ধ করার একটি শক্তিশালী প্রাকৃকিত ঔষধ পেতে পারি।
গ্লুকোমা ও চোখের স্বাস্থ্য:
এনসিবিআই (National Center for Biotechnology Information) তাদের ব্যাপক বৈজ্ঞানিক গবেষণা পত্রটি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। সেই গবেষণার তথ্য অনুসারে, জিংকো বাইলোবা গাছে ফ্লেবোনাইডস, ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-ই এর মতো অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণ রয়েছে। যা চোখের মধ্যেকার রক্ত চলাচল বাড়াতে সাহয্য করতে পারে এবং চোখের ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টিকারী রেডিকেলসকে নির্মূল করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও এটি গ্লুকোমার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। সাথে নরমাল-টেনশন গ্লুকোমার চিকিৎসাতেও জিংকো বাইলোবার নির্যাস ভূমিকা রাখতে পারে।
তবে লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন এবং ট্রপিকাল মেডিসিন একটি ছোট পরিসরের গবেষণা পরিচালনা করে, সেখান থেকে জানা যায়, জিংকো থেকে পাওয়া নির্যাস চোখের দৃষ্টি সুষ্ঠু রাখতে ভীষণ কার্যকরী। তবে এও তারা উল্লেখ করেছে যে, এনিয়ে সামনের দিনগুলোতে আরো বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো দরকার। আমরাও আশা করি দ্রুত এ বিষয় নিয়ে ব্যাপক গবেষণা করে মানুষের কল্যানে তা আরো ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করা হবে।
স্মৃতিশক্তির উন্নতি, ডিপ্রেশন কমাতে সাহায্য করে:
জিংকো বাইলোবা গাছ সংক্রান্ত একটি সমীক্ষায় ১০৭ জনের ওপর একটি গবেষণা করা হয়। ওই ১০৭ জনকে উচ্চমাত্রার জিংকো বাইলোবার ঔষুধ খাবার জন্য দেওয়া হয়। এই ঔষুধটি ব্যাবহারের পর দেখা গিয়েছে, ওই সকল ব্যাক্তিরদের ভেতর প্রত্যেকেরই অহেতুক উদ্বেগ করার বিষয়টি বেশ খানিকটা কমে গেছে।
অতিরিক্ত চাপ এবং উদ্বেগের হাত থেকে মুক্তি, স্মৃতিশক্তির উন্নতি, মনোযোগ বাড়ানর জন্য ঐতিহ্যবাহী চৈনিক ভেষজ চিকিৎসায় জিংকো ইলোবাকে ব্যবহার করা হত। প্রাণীদের উপর একটি গবেষণা পত্রেও, এই বিষয়ে একই মতামত পোষণ করেছে। তবে এই বিয়ে আরো গভীর গবেষণার জন্য বিজ্ঞানীরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা হয়তো অচিরেই একটি শক্তিশালী প্রাকৃকিত ঔষধ পেতে পারি।
জিংকো বাইলোবা গাছের বৈশিষ্ট:
ইতিমধ্যে আমাদের একটি ধারণা হয়েছে যে, আমরা কি রূপ উদ্ভিদ নিয়ে আলোচনা করছি। এই গাছের পাতা, ছাল, কান্ড এমন কি শিকড় প্রত্যেকটির ভেতরে আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন উপাদান দেখতে পাওয়া যায়। যেমন, এটিতে আছে প্রচুর মাল্টি ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-প্লেটলেটেরো উপাদান থাকে। যা এই সকল রোগে যারা আক্রান্ত তা জানে কতটা সাহায্য করি। আর ওই জাতীয় রোগে আমাদের দেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বহু মানুষ আক্রান্ত। আমরা এমডর চারপাশে সচারাচর যে সকল রোগ সাধারণত দেখতে পায় তা হলো সব সময় ক্লান্তি বোধ, অ্যাজমা, মাথা ঘোরা, কানে ভোঁ-ভোঁ শব্দ হওয়ার রোগ ছাড়াও চোখ এবং হার্টের বিভিন্ন রোগ। এই সকল অসুখ সারাতে এটি বেশি সাহায্য করে।
এনার্জি বা কর্মশক্তি বাড়াতে:
আমরা জানি চীনারা পৃথিবীতে খুব দ্রুত তাদের কাজ ও সৃষ্টির মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে। ধারণা করা হয় এখানে জিংকো বাইলোবা এর বেশ বড়ো ভূমিকা আছে। আসুন মূল কোথায়, আমরা মাঝে মাঝে দেখি হঠাৎ কর্মশক্তি বা এনার্জি হারিয়ে ফেলছি। এই হারানো কর্মশক্তিকে ফিরে পেতে ভীষণভাবে কাজে আসে জিংকো বাইলোবা।
এই বিষয়য়ের উপর এক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিলো। তাতে বলা হয়েছে, এই ভেষজ উদ্ভিদের নির্যাসে ফ্লেবোনাইডস এবং টেরপেনেস নামক উপাদান থাকে। এদিকে চিকিৎসা বিজ্ঞান দেখেছে, এই দুটি উপাদান মানুষের শরীরের ভেতর মাংসপেশীতে শক্তি সঞ্চার ও কর্মশক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে।
Ginkgo Biloba / জিংকো বাইলোবা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া:
প্রতিটি জিনিস গ্রহণ করার একটি মাত্রা থাকে, তাই মাত্ৰা অতিরিক্ত গ্রহণ করলে ক্ষতিতো করবেই। তাই Ginkgo Biloba গাছ থেকে আপনি যদি কিছু খেতে চান তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ এর সাথে আলোচনা করে পরিমান মতো খাবেন। আর বেশ কিছু রোগ হলে এবং ঔষধ ব্যবহার করলে এটি ব্যবহার করা নিরাপদ হবে না। তাই অবশ্যই জিংকো বাইলোবা ব্যবহার করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলে নেওয়া উচিৎ।
Ref:
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/23440785/
https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/B9780128159729000238
For more information for your health: