
গুগল অ্যাডসেন্স থেকে ৫ কোটি আয়, কিভাবে?
গুগল অ্যাডসেন্স অনলাইনে অর্থ উপার্জনের একটি হাতিয়ার
গুগল অ্যাডসেন্স থেকে সর্বোচ্চ কত আয় হতে পারে? এমন প্রশ্ন ব্লগিং এ আসার আগে সবার মনে উঁকিঝুঁকি দিয়ে থাকে। প্রতি মাসে প্রায় ৫ কোটি টাকা গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয় করতে পারে একটি ব্লগ সাইট। যা আমাদের জানামতে এযাবৎ কালের সর্বোচ্চ। আর এই আয়টি আসে শুধু মাত্র একটি ব্লগ সাইট থেকে। এছাড়াও ওই ব্লগ সাইটের ম্যাশেবলের ব্যানার, উইগেট স্পেস ও এফিলিয়েট থেকে যা উপার্জন হয় তা সম্ভবত ১০ কোটি বা তারও বেশি। পিটি ক্যাশমোর তার ম্যাশেবল ব্লগ সাইট থেকে ওই পরিমান অর্থ প্রতি মাসে অ্যাডসেন্স থেকে আয় করে থাকে।
পিটি ক্যাশমোরের সাথে গুগল অ্যাডসেন্স এর পরিচয়:
আজ কথা বলবো সেই পিটি ক্যাশমোর এর কর্মজীবন নিয়ে। মাত্র ১৩ বছর বয়সকালে তিনি অসুস্থতার দরুন তার স্বাভাবিক জীবন যাপন হারিয়ে ফেলেন। যা তাকে সারাক্ষণ ঘরে থাকতে বাধ্য করে, স্কুলও বন্ধ হয়ে যায়। তার সারাটা দিন কাটে কম্পিউটারে নেট ব্রাউজ করে। আর সেখান থেকেই সে ব্লগিং করে ইনকাম করা যায় তা জানতে পারে। এর পরথেকে তিনি প্রতিদিন সফলতা লাভ করার আগ পর্যন্ত ১৮ ঘন্টা করে ব্লগিংএর উপর কাজ করা শুরু করে।
প্রথমে তিনি এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লেখা, আর্টিকেল প্রোমোটিং ও সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সহ বিভিন্ন বিষয়ের উপর জ্ঞান অর্জন শুরু করেন। এবং যখন সে তার কাজ সম্পর্কে সম্পূর্ণ একটি ধারণা অর্জন করে তখন সে তার কাজ শুরু করতে খরচের একটি তালিকা তৈরী করে। পরবর্তীতে সে তার বাবা ও মাকে বুঝাতে সক্ষম হয়। এবং তাদের কাছ থেকে সকল বিষয়ের খরচ বাবদ বাংলা টাকায় ৫০ হাজার টাকা নিয়ে কাজে ঝাপিয়ে পড়েন।
পিটি ক্যাশমোরের গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আয়:
পরের গল্পটা আরো বেশি পরিশ্রমের। প্রথমে তিনি একটি ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে ফেলে। তার ওয়েব সাইটের নাম mashable.com । পরিচিত একজনকে দিয়ে একটি ওয়েবসাইট ডিজাইন ও ডেভলপ করিয়ে টাকাগুলো শেষ করে ফেলেন। ওয়েবসাইটের বয়স তখন মাত্র ২ মাস আর আর্টিকেল আছে ৪৫ টি। গুগল অ্যাডসেন্সও পাওয়া গেছে। কিন্তু শুধু পাওয়া যাচ্ছে না ভিজিটর। যে ৮/১০ জন ভিজিটর প্রতিদিন আসে তা দিয়ে তেমন কোনো ইনকাম হয় না। আবারো অনুসন্ধান করা শুরু করলেন। সাধারণত এই জগতে খুব সহজে ফ্রীতে কারো কাছ থেকে সাহায্য পাওয়া যায় না। কারণ যারা এখন দক্ষ তারা অনেক পরিশ্রম করে দক্ষতা অর্জন করেছে। তাই এই ক্ষেত্রে পিটির গল্পটাও তেমনি হতে পারতো। যদি না তার পরিচিত দুই একজন ব্লগারের ভেতর থেকে একজন ব্লগার শিক্ষকের মতো তাকে সাহায্য না করতো। সেই ব্লগার জানালেন, সার্চ ইঞ্জিনে রেঙ্ক করতে গেলে ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমানে এসইও করতে হবে। এর পর শুরু হলো এসইওর কাজ। আমরা জানি, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও একটি ব্যাপক ও সময়সাপেক্ষ বিষয়।
দীর্ঘ ১৮ মাস নির্ঘুম রাত আর একনিষ্ঠ ভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করার পর মাসিক ভিজিটর এসে দাঁড়ালো ১০ লক্ষে। যা ছিল এক বিশাল পাওয়া। এরপর আর পেছনের তাকাতে হয় নাই। চক্রবৃদ্ধি হারে ভিজিটর বাড়তে বাড়তে এখন প্রায় ৫ কোটি। যা থেকে শুধু গুগল অ্যাডসেন্স ইনকাম হয় কম করে হলেও ৫ কোটি টাকা। তা ছাড়াও ম্যাশেবলের ব্যানার, উইগেট স্পেস ও এফিলিয়েট সহ আরো অনেক ইনকাম হয় ওই একটি ব্লগ সাইট থেকে। যার পরিমান গুগল অ্যাডসেন্স থেকে দ্বিগুনেরও বেশিই হবে।
শেষ কথা:
পিটি ক্যাশমোরের এই গল্প পড়ে আমরা সবাই ব্লগসাইটে বা গুগল অ্যাডসেন্স এ ঝাপিয়ে পড়বো তা কিন্তু নয়। আপনি যে কাজই শুরু করেননা কেন, হোক তা অনেক ছোট কিন্তু লেগে থাকতে হবে। কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। চারপাশ থেকে বিভিন্ন প্রলোভন, সমস্যা আপনার পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে। মনে রাখবেন ঘুম, অসুস্থতা, সমাজ, পরিবার-আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড যে কেও চলার পথে আপনার জন্য বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। সব কিছুকে সুন্দর মতো স্থির চিত্তে ম্যানেজ করে শুধু আপনার গন্তব্যের দিকে ছুটি চলার নামই সফলতা। কিছুদিন এইটা আবার কিছুদিন অন্য একটি কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লে কোনোটাতেই খুব ভালো কিছু করতে পারবেন না। একটিতে যখন সফলতা লাভ করবেন, তখন সেই সফলতাই আপনাকে পরিবর্তিতে কি করতে হবে তা জানিয়ে দিবে। সেটা যে কোনো কিছুই হতে পারে।
কি থেকে শুরু করবেন জানতে চাইলে আমাদের লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন।
এই সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে ফোবর্সের এই আর্টিকেলটা পড়তে পারেন।
গুগল এডসেন্স কিভাবে একটিভ করবেন আপনার সাইটে: